মুসলিম বিবাহে কুফু বা সমতা বিধানের গুরুত্ব
বিয়েতে সমতা বিধান কেন প্রয়োজন
মুসলিম বিয়েতে সমতা বিধানকে আরবিতে ‘কুফু’ বলা হয়। ‘কুফু’র গুরুত্ব সম্পর্কে ইসলামের জবাব সুস্পষ্ট ও যুক্তিভিত্তিক। ‘কুফু’ মানে ‘সমতা ও সাদৃশ্য’। অন্য কথায়, বর ও কনের ‘সমান-সমান হওয়া’, একের সঙ্গে অন্যজনের সামঞ্জস্য হওয়া।
প্রথম পর্ব
পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে ইহুদিরা দেখে সম্পদ, খ্রিস্টানরা দেখে সৌন্দর্য আর মুসলমানদের দেখা উচিৎ দ্বীনদারী (পরহেযগারী) বা, মহান আল্লাহর ভীতি। ইসলামে মেয়ে জন্ম নেয়া বোঝা কিংবা মুছিবত নয় বরং আল্লাহর রহমত।
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (দ:) বলেছেন, ‘চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করে নারীকে বিবাহ করা হয়: (১) তার সম্পদ
(২) বংশ
(৩) সৌন্দর্য ও
(৪) ধার্মিকতা। তুমি শুধুমাত্র ধার্মিকতার প্রতি লক্ষ্য কর’
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হাদিস/২৯৪৮ ‘বিবাহ’ অধ্যায়) ।
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ পৃথিবী সম্পদ। আর পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হচ্ছে সৎ চরিত্রবান নারী’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হাদিস/৩০৮৩) ।
পাত্রী দেখা শরী‘আতের দৃষ্টিতে মুস্তাহাব। মহরের পরিমাণসহ সবকিছু পাকাপাকি হয়ে যাওয়ার পরে গোপনীয়ভাবে শুধুমাত্র পাত্র পাত্রীর চেহারা দেখতে পারবে। পাত্রী তো আশরাফুল মাখলুকাত, মাতৃজাতি- তার ইজ্জত সম্মান রক্ষা করা সকলের কর্তব্য।
বিবাহের লেন-দেনে ছেলে নিজের সম্পদ অনুযায়ী মোহর দেবে, স্ত্রীর ভরণ-পোষণসহ সামর্থ্য অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদেরকে ওলীমা খাওয়াবে।
শরী‘আতে মোহরের কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। প্রত্যেকে নিজের সাধ্যানুযায়ী মোহর ধার্য করবে। মোহরের সর্ব নিম্ন পরিমাণ হচ্ছে আড়াই ভরি রুপার দাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫২৫০ টাকা (২০২৪ সাল)।
আমাদের সমাজে প্রথা চালু আছে যে ছেলের সামর্থ্য থাক বা না থাক লাখ, লাখ, টাকা মোহর নির্ধারণ করতে হবে যা শরী‘আতের দৃষ্টিতে জায়িয নাই।
আরেকটি মারাত্মক অপরাধ হচ্ছে যৌতুক। কনে পক্ষের উপর অন্যায় লেন-দেনের বোঝা চাপিয়ে দেয়া। সাথে বর যাত্রীর শতশত লোকজনের দাওয়াতে মেজবানীর ব্যবস্থা করা। এইটা মেয়ের বাপের উপর চরম জুলুম ও অন্যায় আবদার। যা সম্পূর্ণ না জায়েজ।