বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বিকল্প রেলপথ ভারতের
‘চিকেন নেক’ নামে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যগুলোতে ট্রেন চলে সিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে। এটি বাংলাদেশ ও নেপালের মাঝ বরাবর অঞ্চল ও ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত। নতুন প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো ‘চিকেন নেক’ নামের এই করিডরটির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানো।
সামরিক এবং বেসামরিক পণ্য পরিবহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’ রেল করিডোরটি। এটি ভারত ও চীনের মধ্যে বিবাদ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিকল্প রুট হিসেবে বাংলাদেশকে যুক্ত করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পে বাংলাদেশকে যুক্ত করা ১৪টি নতুন রুট থাকবে। রুটগুলোতে সবমিলিয়ে রেললাইন থাকবে ৮৬১ কিলোমিটার। সঙ্গে থাকবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া বিকল্প রুটটি। এতে করে সবমিলিয়ে এই প্রজেক্টে রেললাইন হবে ১ হাজার ২৭৫.৫ কিলোমিটার।
বাংলাদেশে নতুন রেললাইনসহ পুরোনো রেললাইন বদলে নতুন রেললাইন স্থাপন করবে ভারত।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারত বাংলাদেশে রেললাইন তৈরি করবে ১৯৮০ সালের বাণিজ্য চুক্তির সুবিধা নিয়ে।
“এটি কলকাতা থেকে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে যাওয়ার সময় কমবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ, বাণিজ্য ও পর্যটনখাত বৃদ্ধি করবে।"
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দেশটির এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ট্রেন নিতে চায়। ভারত এর আগে প্রস্তাব দিয়েছিল, পরীক্ষামূলক যাত্রার পণ্যশূন্য ভারতের গেদে থেকে
পরীক্ষামূলক যাত্রার পণ্যশূন্য রেলগাড়ি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আসবে। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুল্লাপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারী সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।
ডালগাঁও পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি স্টেশন। এ স্টেশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার রেললাইন গেছে। এই লাইন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যকে যুক্ত করেছে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে এ রেলপথ ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বগামী ট্রেন জলপাইড়গুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডোর ঘুরে যায়।
বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে।
ফলে ভূ-রাজনৈতিক কারণে এ রেলপথ ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও বাংলাদেশ সহ ভারতীয় উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে সহজ ও সময়োপযুগি সুবিধা ভোগ করবে দুদেশ।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে নতুন রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করবে ভারত ।
এবার আর ঘুরিয়ে পেচিয়ে নয়, একদম বাংলাদেশের ভেতর দিয়েই রেল সংযোগ চালুর পরিকল্পনা করছে ভারত। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলকে অন্যান্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করতে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বিকল্প রেল যোগাযোগের রুট তৈরি করতে যাচ্ছে ভারত।