হাসিনা বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ৭০৮ জন।
ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ।
হাসিনা বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ।
হাসিনা বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ করল ইউনূস সরকার।
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে শহীদদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খসড়া তালিকায় প্রাথমিকভাবে ৭০৮ জন শহীদের পরিচয় জমা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪খ্রি:) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক গণ-বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলা পর্যায় হতে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের নামের খসড়া তালিকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ওয়েবসাইট (www.hsd.gov.bd) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (www.dghs.gov.bd) প্রকাশ করা হয়েছে।
বাঙালি জাতি বীরের জাতি। রক্তে রঞ্জিত রাজপথে, বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে বুক পাতা, রক্ত মাখা শরীরে অধিকার চাওয়া, স্বৈর-শাসকদের বারবার দাঁতভাঙা জবাব দেয়া, মানুষ ৯০- এর স্বৈরাচার পতনের ইতিহাস ইত্যাদি অকুতোভয় দুঃসাহসী মহান বীর যোদ্ধারা বাংলাদেশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সৃষ্টি করে।
বৈষম্যের যন্ত্রণা বুকে পুষে রাখতে জানে না শোষিতরা। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বুকের যন্ত্রণা।
জুলাই'২৪ গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হলো কেন?
শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রকে গোলা টিপে হত্যা করেছিল। দিনের ভোট রাতে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালু করে মুক্ত চিন্তার মতকে কবরে পাঠিয়েছিল। শিক্ষা ব্যবস্থাকে মুমূর্ষু করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আইসিইউতে রেখেছে। কৃষকের কৃষি পণ্যের ন্যায্য মজুরি না পেয়ে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শ্রমিকের শ্রমের ন্যায্য মজুরি না পেয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত জীবন যাপন করে।
গুম, খুন, হত্যা, সড়কে মৃত্যুর মিছিল আর আয়না ঘরের কারসাজিতে সাধারণ মানুষের অন্তরে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল।
ফলে রাষ্ট্রের সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র- জনতার মিছিলে মিছিলে জনসমুদ্র তৈরি হয়েছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
যার ফলে বাংলাদেশে নতুন একটা ইতিহাস রচনা হয় জুলাই'২৪ গণঅভ্যুত্থান। সেই সাথে দেশ পরিচালনার জন্য গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালিন সরকার ব্যবস্থা।
রাষ্ট্র সংস্কার কাজ কেমন হবে?
দেশ কি কল্যাণ মুলক রাষ্ট্র হবে?
মুক্ত চিন্তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা কি থাকবে?
শিক্ষা পণ্য না কি মৌলিক অধিকার হবে?
জুলাই'২৪ গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় কেমন দেশ চায় আমাদের ছাত্র- জনতা?
অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কার করার উদ্দেশ্যে ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো:-
💘 নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন,
💘 পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন,
💘 বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন,
💘 দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন,
💘 জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও
💘 সংবিধান সংস্কার কমিশন।
ঘোষিত ছয়টি কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের কাজের যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া জরুরি ছিল।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ‘৭১, ৯০-এর স্বৈরাচার পতনের ইতিহাস ও জুলাই'২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় একটি কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ, সাধারণ জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করণ, বৈষম্য,নির্যাতিত, শোষিত ও নিপীড়িত জনগণ নতুন আরও একটি ইতিহাস সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশের মাটি রক্তে ভেজা। এই রক্ত রাঙানো দেশ আর বিন্দু রক্ত নয়, রাষ্ট্র সংস্কার কাজের মাধ্যমে দেশ হোক বৈষম্যহীন।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের শহীদদের প্রত্যেককে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। তাদের রক্তের হক আদায় করে, আমাদের একটি সুখী-সমৃদ্ধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ এবং ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার তৌফিক দিন। আমিন।